রবিবার, ২৪ অগাস্ট ২০২৫, ০৯:৩৫ পূর্বাহ্ন

চিলমারীর হরিজনরা প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরে বুনছে সুখের স্বপ্ন

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:: কুড়িগ্রামের চিলমারীতে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উপহারের ঘরে আশ্রয় নিয়ে সুখের স্বপ্ন বুনছেন হরিজন সম্প্রদায়ের ৩০ পরিবার। একসময় যাদের থাকার ছিলো না ঘর, তীব্র রোদ কিংবা বৃষ্টিতে ভাঙা ঘরে বসবাস করতে হতো তাদের। যেখানে হরিজন সম্প্রদায়ের মানুষকে সমাজে ভিন্ন চোখে দেখা হতো। বর্তমানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাদের পল্লী তৈরি করে সমাজে অন্য দশজনের মতো স্বীকৃতি দিয়েছেন। এতে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন হরিজনরা।

উপজেলা সদরের প্রাণ কেন্দ্রে বাজারের পাশেই এক একর জায়গা ক্রয় করে ৩০টি পরিবারের প্রায় দেড়শতাধিক মানুষের জন্য পাকা ঘর নির্মান করা হয়। গড়ে তোলা হয় হরিজন পল্লী। প্রবেশের রাস্তাসহ চারদিকে রোপন করা হয় বিভিন্ন প্রজাতির চারা গাছ। এছাড়াও তাদের দাবির পেক্ষিতে পাশেই নেয়া হয় শ্মশানের জন্য জায়গা।

চিলমারী উপজেলার সাবেক নির্বাহী অফিসার মো. মাহবুবুর রহমানের অক্লান্ত পরিশ্রমে ও পরিকল্পনায় পল্লীটি এমন ভাবে সাজানো হয়, যা নজর কেড়েছে এলাকাবাসীর। ঘর গুলো এমন ভাবে নির্মান করা হয় প্রতিটি পরিবারের ঘরের সামনে রাখা হয় বেশ বড় উঠান। ঘর গুলো পরিকল্পনা মতাবেশ নির্মান এবং চারদিকে রাস্তা সাথে গাছের চারা রোপন করায় দেখলেই মনে হয় একটি মনোরম পরিবেশের পরিপাটি সাজানো গোছানো গ্রাম মন্তব্য করেন এলাকার ফুলমিয়াসহ অনেকে। তারা আরো বলেন, শুধু তাই নয় রাতের আধারে বিদ্যুতের বাতির আলোতে ঝিলমিল করতে দেখা যায় পল্লীটিকে। বাকি কাজ গুলো শেষ হলে আরো সুন্দর হয়ে উঠবে।

মিস্ত্রি সিতিশ চন্দ্র বলেন, ঘরগুলো তৈরি করতে যা ব্যবহার করা হয়েছে এবং মজবুত করা হয়েছে সাধারন কেউ নিজের বাড়িতেও তা করে না। আশ্রয় নেয়া পারুল জানান, হামার ছিল না নিজস্ব জায়গা, ছিল না থাকার ঘর, ছাওয়া পাওয়া নিয়ে কষ্টে ছিলাম, সরকারের দেয়া ঘর পেয়ে একটা ঠিকানা পাইছি।

সুমি, রুমাসহ বেশ কয়েকজন হরিজন সম্প্রদায়ের মহিলারা বলেন, মানুষজন আমাদের একটু অন্য নজরে দেখে, যেন ঘৃণা করে, থাকার মতো বাড়িঘর না থাকায় পরিবার পরিজন নিয়ে ভাসমান জীবন যাপন করতাম, প্রধানমন্ত্রীর উপহার জমিসহ ঘর পাইছি এখন আমরা সুখ পাইছি।

নেমু লাল বলেন, যদিও খাওয়া তেমন কষ্ট ছিলনা, কিন্তু থাকার কষ্ট ছিল, ৮/১০ মিলে ছোট একটা ঘরে বা অন্যের দোকানের বারান্দায় রাত কাটতো, এখন আর সেই কষ্ট নাই, দিন শেষে হলেও একটা নিজস্ব থাকায় স্থান করে দিয়েছে সরকার। তিনি আরো বলেন, ইউএনও স্যার (সাবেক উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মাহবুবুর রহমান) আমাদের বারবার খোঁজ খবর নিতেন, ঘর গুলো যেন ভালো ভাবে হয় সব সময় দেখতে আসতেন, আমাদের সাথে এতো ভালো আচরন করতেন আমাদের মাঝে মাঝে তা স্বপ্ন মনে হতো। মনি লাল বলেন, স্বপ্নেরও ভাবিনি এতো সুন্দর ২টি ঘর, বারান্দা, রান্না ঘর, ঘরের সাথে বাথরুম, পানির ব্যবস্থা সাথে বিদ্যুতের ব্যবস্থা, আছে ঘরের সামনে উঠান।

এমন উদ্যোগ নেয়ায় প্রধানমন্ত্রী কে ধন্যবাদ জানিয়ে কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল অরীফ বলেন, বাংলাদেশে এই প্রথম এমন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, হরিজনদের জন্য একটি হরিজন পল্লী গড়ে তোলা হয়েছে, এতে থাকবে খেলার মাঠ, শিশুদের জন্য শিক্ষার ব্যবস্থা, এটি একটি মডেল হিসাবে গড়ে তোলা হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com